পার্থক্য শুধু একটি অক্ষরের; দূরত্ব- পৃথিবীর ব্যাস সমান।
মিথ্যা বলা ভালো না- কে না জানে?
কে না জানে- পরনিন্দা মন্দ?
অতি ভোজন, অতি কথন, অতি নিদ্রা ভালো না- কে না জানে?
কে না জানে- সুদ, ঘুষ, দুর্নীতি মন্দ?
ক্ষমা মহত্বের লক্ষণ- কে না জানে?
কে না জানে- ঈর্ষা, হিংসা, লোভ, ক্রোধ মন্দ?
যতটুকু জানলে মানুষ হওয়া যায়, তার থেকে একটু বেশি সবাই জানে।
যতটুকু জানলে দেবতা হওয়া যায়, তার থেকে যথেষ্ট বেশি সবাই জানে।
যতটুকু জানলে ঈশ্বর হওয়া যায়, তার থেকে অনেক বেশি সবাই জানে।
‘কী করিতে হইবে’ জানি আমরা সবাই। আমরা জানি- যদি ভিন্ন ফল চাই, ভিন্ন কিছু করতে হবে। অথচ আমরা সেই একই কাজ করে যাচ্ছি- দিনের পর দিন, যুগের পর যুগ- থোড় বড়ি খাড়া, খাড়া বড়ি থোড়; বড়ি থোড় খাড়া, থোড় খাড়া বড়ি।
তাজ্জব ব্যাপার! ভিন্ন কিছু করি না আমরা। অথচ প্রশ্ন করি, কেন ভিন্ন ফল উৎপন্ন হয় না?
মানুষ তো সর্বদা ভালোটাই বেছে নেয়- এটাই তো মানুষের স্বভাব, নয় কি? তবে ‘সত্য বলা মিথ্যা বলার চেয়ে ভালো’- জেনেও মানুষ মিথ্যা বলে কেন? ‘প্রতিদিন ১ঘন্টা হাঁটা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো’- জেনেও মানুষ হাঁটে না কেন? কে তাকে বাধা দেয়? মানুষকে বাধা দেয় তারই প্রবৃত্তি।
সুতরাং, ‘মানুষ সর্বদা ভালোটা বেছে নেয়’- এটি ঠিক নয়। মানুষ ভালোটা বেছে নেয়, যদি এবং শুধু যদি তাতে প্রবৃত্তির সায় থাকে।
জানা ও মানার পথে একমাত্র বাধা প্রবৃত্তি।
বেশি জানা ও কম মানার কারণ প্রবৃত্তি।
জানাকেই মানা ভাবার কারণ প্রবৃত্তি।
জেনেশুনেই মানুষ অধর্ম করে। দুর্যোধন বেশ ভালোভাবেই জানত ধর্ম কী। কিন্তু ধর্ম সে পালন করতে পারেনি, প্রবৃত্তির কারণে। প্রবৃত্তি মনুষ্যের বিচার থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী। সর্পের বিষ, হাতির ওজন, হরিণের ক্ষিপ্রতা, সিংহের হিংস্রতা, সব আছে এর মধ্যে।
প্রবৃত্তি এমন এক অসুর, যাকে পরাজিত করতে মহাকাল থেকে মহাকালীর আবির্ভাব আবশ্যক। ইচ্ছময়ীর এই শক্তিই হলো ইচ্ছাশক্তি।
কে মহৎ? জানা ও মানার মধ্যে দূরত্ব যার কম।
কে মহত্তর? জানা ও মানার মধ্যে দূরত্ব যার আরো কম।
কে সর্বশ্রেষ্ঠ? জানা ও মানার মধ্যে যার দূরত্ব নেই।
তাই সব কথা এক কথায় গিয়ে ঠেকে- ‘প্রবৃত্তি জয় করো’।
Some text
ক্যাটাগরি: চিন্তা
[sharethis-inline-buttons]