শুক্রবার বিকাল ৫:৪৮, ১লা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ১৫ই নভেম্বর, ২০২৪ ইং

আমার দিনরাত্রী (পর্ব-৬)

৮৪৩ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পরিবার ও রাষ্ট্রকে একই ক্যটাগরিতে ফেলা হয়েছে। পার্থক্য শুধু ছোট আর বড়। পরিবারের সদস্য সংখ্যা যেখানে সর্বোচ্চ ২৫/৩০ জন মানুষ। সেখানে রাষ্ট্রে মানুষের (নাগরিকের) সংখ্যা হল কোটি কোটি। পার্থক্য শুধু সংখ্যার। পরিবার প্রধান অযোগ্য/অসৎ হলে পরিবারের কি উপায়? অনেকটা নাগরিকদের অযোগ্যতা ও অসার্ম্যথতাও বটে! তাদের সকলের সামনে ঘটনা ঘটছে, নাগরিকেরা দেখেও না দেখার ভান করছে। অর্থাৎ অনিয়ম হচ্ছে, কেউ প্রতিবাদ করছে না। যদি কেউ প্রতিবাদ করার চেষ্টা করে, আর প্রতিবাদ কারীর সংখ্যা অল্প হয়, তাহলে উল্টো প্রতিবাদকারীকে দোষারুপ করা হয়। তার জীবন দুর্বিসহ করে তোলা হয়। অপশাসকের সমর্থকরা স্থিতিশীলতার অজুহাতে বিদ্যমান অপব্যবস্থা টিকিয়ে রাখতে চায়!

এই যে ঘুষ, দুর্নীতি, গুম এ ব্যাপারে কথায়, লেখায় সবর্ত্র সবাই সোচ্চার। কিন্তু বাস্তবে কমবেশী সবাই জড়িত। কিছু ব্যতিক্রম থাকার কথা ছিল, দরকার ছিল। সাধারণত সৃষ্টিতে কিছু ব্যতিক্রম পাওয়া যায়। কিন্তু কি অদ্ভুত! এ ব্যাপারে ব্যতিক্রম পাওয়া গেল না। সবাই নিশ্চুপ সামান্য সংখ্যক মানুষও এ ব্যাপারে সোচ্চার হল না। রাষ্ট্র ধীরে ধীরে উন্নত হচ্ছে, উন্নয়নের গতি আরও বেগবান হত যদি সুশাসন নিশ্চিত হত। এত দৃশ্যমান উন্নয়নের পরও ফকিরাপুলের ফকির অথবা বস্তির সংখ্যা কিন্তু কমছে না!

শিক্ষাক্ষেত্রে অনিয়ম ও সময়ের অপচয় সীমাহীন, আর এতে সব নিয়ম শৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়েছে। অর্থাৎ স্কুল, কলেজের দৈনিক যে ক্লাস রুটিন সেটা শিক্ষক, শির্ক্ষাথী কেহই সঠিক ভাবে মেনে চলছে না। যে প্রতিষ্ঠানে সবাই নিয়ম-শৃঙ্খলা শেখার কথা সেখানেই সময়ানুবর্র্তিতা নিয়ম-শৃঙ্খলা নাই। অবৈধ অর্থের লেনদেন সবচেয়ে বেশি। অথচ এই অঙ্গনটাই সবচেয়ে বেশী পুত-পবিত্র থাকার দরকার ছিল। আর শিক্ষাঙ্গনটা যদি পুতঃপবিত্র থাকত, তাহলে এই নশ্বর পৃথিবীতেও কিছুটা হলেও বেহেশতি পরিবেশ বিরাজ করত! সরকারের অন্যান্য বিভাগেও ব্যাপক দুনীর্তি বিদ্যমান। কোন বিভাগই র্দুনীর্তিমুক্ত নয়। সকল দুর্নীতির মূল উৎস শিক্ষা বিভাগ। কারন সরকারের সকল কর্মকর্তা কর্মচারি শিক্ষা বিভাগ থেকে শিক্ষা নিয়েই কর্মে প্রবেশ করে।

সমস্যা কি জানতে পারলাম! সমাধানও পেয়ে গেলাম। অর্থাৎ র্দুনীতি র্নিমুল করতে হবে, উচ্ছেদ করতে হবে । কিন্তু র্দুনীতি নির্মুল করবে কে ? দমন/ উচ্ছেদ করবে কে? বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাধবে কে? বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাধার গল্পতো সবারই জানা তাই গল্পটা লিখলাম না। সিভিলাইজেশন মেইকস মেন করাপটেড। অর্থাৎ সভ্যতা মানুষকে দুর্নীতি পরায়ন করে তোলে। সভ্যতার চিহ্ন কি? সভ্যতার চিহ্ন হল ইঞ্জিন। মানুষ ইঞ্জিন বানানো শিখল মানে সভ্য হল। মানুষ যখন প্রাকৃতিক গুহায় বসবাস করত তখন মানুষ তথাকথিত অসভ্য ছিল। তখন তাহার চাহিদা ছিল খুবই সীমিত। যখন সে সভ্য হল তখন তার চাহিদা হল অসীম। আর সেই অসীম চাহিদার যোগান দিতে গিয়েই মানুষ র্দুনীতিগ্রস্থ হল।

সভ্য মানুষ ধর্মের সন্ধান পেল। ধর্ম মানুষকে বলল সত্যবাদী হতে হবে। সত্য ছাড়া ধর্মের আচার অনুষ্ঠান পালন করলেও কোন লাভ হবে না। কারণ ধর্মে বলে সকল পাপের মূল হল মিথ্যা। মানুষ ধার্মীকও আবার পাশাপাশি দুর্নীতিগ্রস্থও। একই অঙ্গে উভয়রুপ। যেটা ধর্মের বিধানমতে সম্ভব হওয়ার কথা ছিল না।

ইতিমধ্যে ভূমি সংকট দেখা দিয়েছে। আগে তো ভুমি কেবল কৃষিকাজে ব্যবহ্রত হত। এখন ভুমির উপর মানুষের যাতায়াতের সুবিধার জন্য সড়ক ও রেলপথ নির্মান করা হয়েছে । বড় বড় কল কারখানা , বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, বিশাল বিশাল বিমান বন্দর আরও কতকিছু তৈরি করা হয়েছে? রাস্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রি, প্রধান বিচারপতির বাসভবন, কার্যালয়, আদালতভবন, সচিবালয়, সংসদভবন, জেলখানা, খেলাধুলার জন্য ষ্টেডিয়াম সবকিছুইতো ভুমির উপর। বড় বড় সেনানিবাস নির্মান করা হয়েছে কৃষি জমির উপরই। এমন কি ভুমি ব্যবহার করে ভুমির উপর মানুষ বড় বড় দিঘী খনন করেছে। সেচের অথবা পানি নিষ্কাসনের সুবিধার জন্য মানুষ খাল খনন করেছে। যেমন আমাদের ব্রাক্ষণবাড়ীয়ার কাউতুলির কুরুলিয়া খাল। নৌ চলাচলের সুবিধার জন্য মানুষ তৈরি করেছে সুয়েজ খাল, পানামা খাল ইত্যাদি। অবশ্য সুয়েজ খাল, পানামা খাল খননে কৃষি জমি নষ্ট হয় নাই। এই সেদিন একশত বছরও হয় নাই। ১৯৪০ সনে ঢাকা শহরের ধানমন্ডিতে শুধু ধানের জমি ছিল। ১৯৬০ সনে বনানী, উত্তরা একেবারে গন্ডগ্রাম ছিল। গুলিস্থানের সন্নিকটবর্তী ফুলবারিয়ায় ছিল ঢাকা রেলওয়ে ষ্টেশন। তেজগাও র্আন্তজাতিক বিমান বন্দর ছিল। তেজগায় এখনও অবশ্য বিমান বন্দর আছে, তবে বর্তমানে এটা শুধু সামরিক বিমান বন্দর।

দেশের প্রধান বিচারপতি নিজে বললেন তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ। তারই অধীনস্থ আইন মন্ত্রি বললেন, প্রধান বিচারপতি অসুস্থ। একটা দেশের প্রধান বিচারপতি অথবা আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী যদি সুস্পষ্ট মিথ্যা কথা বলেন, তাহলে আর রইল কি? সুস্থতার সার্টিফিকেট তো দেওয়ার কথা স্বাস্থ্যমন্ত্রির, তথা মেডিকেল বোর্ডের। এবং এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট আইনের বিধান আছে। শুধু তাই নয় একজন সুস্থ ব্যাক্তিকে অসুস্থ বলা সরাসরি ফৌজধারি অপরাধ। আইন মন্ত্রিকে প্রধান বিচারপতির অধীনস্ত বললাম কথাটা কেমন লাগে! শুধু আইনমন্ত্রি কেন? পুরো দেশ প্রধান বিচারপতির আওতাধীন। কেমনে ? পুরো দেশ কার আওতায়? পুরো দেশ সংবিধানের আওতায়। আর সংবিধানের অভিভাবক কে? সংবিধানের অভিভাবক/তথা ব্যাখা কারী প্রধান বিচারপতি। ইতিমধ্যে জানলাম প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রের (৩) তিন নম্বর ক্ষমতাধর ব্যক্তি। আবার সংবিধান তৈরী করে কে? সংবিধান তৈরী করে জনপ্রতিনিধিরা (অবশ্য বর্তমানে অতি গোপনে দেশী বিদেশী স্বার্থ্বান্বেষী মহল এর রচনায় জড়িত থাকে)। বর্তমান বাংলাদেশের প্রচলিত সংবিধানে ১৪০ নং ধারায় উল্লেখ আছে যে, বাংলাদেশের মহামান্য সুপ্রিম র্কোটের, হাইর্কোট বিভাগ যে আদেশ দান করবেন, সে আদেশ সরকার যথযথ ভাবে প্রতিপালন করবে। আর এটাকেই সাংবিধানিক বাধ্যবাদকতা বলা হয়। এরকম সুস্পষ্ট আইন থাকার পরও হাইর্কোটের নির্দেশ অমান্য করল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। (ঢাকসু নির্বাচনের ব্যাপারে) এই যে বিষয় গুলো আমার নিকট অন্যায়/ভুল/মিথ্যা বলে সুস্পষ্ঠ মনে হল, আমরা একসঙ্গে বসবাস করি অথচ সবার নিকট ব্যাপারটা এরকম মনে হল না। আবার মনে হলেও তথাকথিত দলীয় স্বার্থে সঠিক কথাটা কেহই বলতে চায় না। স্বাধীন র্দুনীতি দমন কমিশন! স্বাধীন বিচার বিভাগ! স্বাধীন শব্দের অপব্যবহার বৈ কিছু না!

গত ১লা আগষ্ট ২০১৮ তে লিখেছিলাম কোন জব করি না। পুরো একমাস কাটালাম জবলেছ (বেকার)। বর্তমানে আমি টি, এ রোডের মক্কা ইলিকট্রিক, নামক দোকানে কর্ম করি। তবে মাহিনা খুব কম! স্বাভাবিক ভাবেই বেকার সময়ের রুটিন এর সঙ্গে বর্তমানের দৈনন্দিন রুটিন ব্যতিক্রম। তবে জনাব জাকির মাহদিনের দেশ-দর্পন এর সহিত যোগাযোগ অব্যাহত আছে। সেই যে বলছিলাম কম্পিউটারে টাইপ করতে শিখতে চেষ্টা করছি। সেই চেষ্টাতেই লেগে আছি। সাফল্য যে একেবারে নেই তা নয়। সফলতা আসতেছে, তবে খুব ধীরে! আর একটু দ্রুত হলে বেশ ভাল লাগত।

শতভাগ সফলতা সৃষ্টিতে নেই। শতভাগ সফলতা শুধু স্রষ্টার একার। মাইকেল এইচ হার্ট এবং মুসলমানদের মতে সৃষ্টিতে শতভাগ সফল কোটি কোটি মানুষের মধ্যে কেবল মাত্র হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)। এই সফল মানুষের অনুসারীরা আবার নিজেরা শতভাগে বিভক্ত। স্রষ্টা ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের বিভক্ত হতে সম্পুর্ণ নিষেধ করেছেন। সবাই ¯্রষ্টাকে মানে অথচ কেহই স্রষ্টার নিষেধাজ্ঞা মানল না। সেটা কেমন মানা হল! নিষেধাজ্ঞাতো মানলইনা আরো কত উল্টো কথা বলে। নবী (সাঃ) বলেছেন, তথা আশংকা করেছেন। উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, আমার উম্মতেরা তিয়াত্তর ভাগে বিভক্ত হবে! শব্দের/বাক্যের গভীরে যান, নবী (সাঃ)বলেছেন, ”আমার উম্মতেরা” অর্থ্যাৎ নবীর (সাঃ) সকল উম্মত/অনুসারীরা। আর নবীর উম্মত মানেই মুসলমানেরা। আর মুসলমানদের বিভক্ত হতে স্বয়ং আল্লাহই নিষেধ করেছেন। কারো পিতা যদি সন্তানদের, ছেলেদের বলেন আমি মরার পর তোরা চুরি করবি, ভিক্ষা করবি। তাহলে কি সত্যি সত্যি পিতার মৃত্যুর পর সন্তানেরা চুরি করা, ভিক্ষা করা শুরু করে দেয়? নাকি পিতার কথামত যেন চুরি/ভিক্ষা করতে না হয় সে পদক্ষেপ নেয়! নবী আশংকা করেছেন, আল্লাহ নিষেধ করেছেন। ওয়াতাছিমু বি হাবল্লিাহি জামেয়া, অলা তাফাররাকু। মহান আল্লাহর সুস্পষ্ট আদেশ।

Some text

ক্যাটাগরি: মতামত

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply

আমি প্রবাসী অ্যাপস দিয়ে ভ্যাকসিন…

লঞ্চে যৌন হয়রানি