“শান্তির নগরী”
ওয়াজেদা পারভীন পপি
…………………………………..
মাইলের পর মাইল ধুধু মরু প্রান্তর
এক পাশে খেজুর বাগান আর
অপর পাশে পথরের পাহাড়
আবার যেতে যেতে কিছুদুর
গেলে দুপাশেই বালুর পাহাড়
মাঝখানের বিশাল প্রশস্ত রাস্তার
ভিতর চলছে ১৫০ কিমি বেগে
বিলাশবহুল সাজানো গাড়ীর সারিবদ্ধ সমাহার।
পানি নেই, তবুও সবুজ গাছ আর
তাপমাত্রা মাঝে মাঝে ৫০ ডিগ্রিরও উপর
সেখানেও দেখা যায় বাহারী রকম উটের।
কিছুদুরে গেলে ৬ হাজার কিমি উচ্চতার পাহাড়
সেখানে গড়ে উঠেছে এক স্বর্গীয় শহর
কোন বিরুপ প্রভাব নেই প্রকৃতির
কেনোনা এখানে যে রয়েছে আল্লাহর ঘর
শুয়ে আছেন সবার প্রিয় স্রেষ্ঠ নবী রাসুল পাক (সা:)
প্রতিনিয়ত আসা যাওয়া চলে আল্লাহর মেহমানদের।
১১ দিন ধরে দেখছি এই দেশকে আল্লাহর মেহমান হয়ে।
আমাদের মুসলমানদের কেবলা কাবা শরীফ। এ কাবা শরীফ মহান আল্লাহ তায়ালার এক অপূর্ব সৃষ্টি। প্রতি বছর লাখ লাখ মুসলমান কাবাঘর তওয়াফ করতে মক্কা গমন করেন। পৃথিবীতে সর্বপ্রথম আল্লাহর নির্দেশে ফেরেশতারা কাবাঘর নির্মাণ করেন।
হযরত আদম (আঃ) কাবাঘর আল্লাহর আদেশে সর্বপ্রথম পুনঃনির্মাণ করেন।পরবর্তিতে ইবরাহিম (আ) ও ইসমাইল (আ) দুজন একত্রে কাবার পুন:নির্মাণ করেন। ইবরাহিম (আ) কাবার পূর্ব কোণে বেহেশত থেকে আগত হাজরে আসওয়াদ পাথর স্থাপন করেন।
শতাব্দীর পর শতাব্দী অতিবাহিত হলো। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নবুয়ত প্রাপ্তির ৫ বছর আগে কাবাঘর সংস্কার করে মক্কার বিখ্যাত কোরাইশ বংশ। এ কুরাইশ বংশেই মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ৫৭০ খৃস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। মহানবী (সা.) জীবিত অবস্থায় ৬ হিজরীতে আব্দুল্লাহ ইবনে জোবায়ের (রা.) কাবা শরীফ সংস্কার করেন। হাজ্জাজ বিন ইউসুফ ৭৪ হিজরীতে কাবা শরীফ সংস্কার করেন। সুদীর্ঘ ১৪শ’ বছরে কাবাগৃহে কোনো সংস্কারের প্রয়োজন হয়নি। শুধুমাত্র কাবাঘরের চারপাশে অবস্থিত মসজিদে হারামের পরিবর্ধন, সংস্কার বা সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হয়েছে।
আল্লাহর অশেষ রহমতে ২টা উমরাহ্ সম্পন্ন করলাম।
রাসুল পাক (সা:) এর বাড়ী, আবু জাহেলের বাড়ী, তাইফের কাঁটা বুড়ির বাড়ী, বদরের যুদ্ধ ময়দান, অহুদের যুদ্ধ ময়দান, আরাফাতের ময়দান, মীনা, মুজদালিফা, রহমতের পাহাড়, হেরা পর্বতের গুহা ভিজিট করাসহ ২টা উমরা হজ, ৪টা তাওয়াফ, মসজিদে নবাবীতে, কাবা শরীফে এবং সৌদী আরবের বিখ্যাত সব মসজিদে নামাজ আদায় করার মাধ্যমে আমাদের সৌদী আরব টুর শেষ করে ৫ দিনের দুবাই টুরের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম আজ।
এখানকার মানুষগুলোর অকৃত্তিম ভালোবাসা এবং সেবায় মুগ্ধ আমরা।
খুব কষ্ট হচ্ছে যেতে এই শান্তির নগরী ছেড়ে।
অবশ্যই আবার আসবো………….
……………………………..
২৭ মে, ২০১৮ ইং।
Some text
ক্যাটাগরি: নাগরিক সাংবাদিকতা, ভ্রমণ কাহিনি
[sharethis-inline-buttons]