বর্তমান বিশ্বের কয়েকশ’ কোটি মানুষের কাছে বিশেষশ্রেণি কর্তৃক ইসলাম ভুলভাবে উপস্থাপিত। এদিকে আমাদের কিছু জানা-অজানা ভুল এটাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। তাই কোরআন হাদিস ও ইসলামের নাম শুনলেই এই শ’ শ’ কোটি মানুষের অন্তরাত্মা কেঁপে উঠে। তাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ, কামুক, সেকেলে ইত্যাদি। এজন্য ইসলাম, কোরআন হাদিস বা ধর্মের নাম দিয়ে এত এত বক্তব্য-বিবৃতি না দেয়াই ভালো। আর রাজনীতি (প্রচলিত রাজনীতি) তো চলতেই পারে না।
ধর্মীয় শিক্ষাব্যবস্থায়ও যথেষ্ট পরিবর্তন আনতে হবে। ধর্মের উদারতা, যৌক্তিকতা, বাস্তবতা, বৈজ্ঞানিকতা, সহিষ্ঞুতা চর্চা না করে যারা ইসলামের নামে মানবসমাজকে বিভক্ত করে, বিভ্রান্তি ছড়ায়, ফেৎনা সৃষ্টি করে, অন্যকে ছোট করে, লজ্জা দেয়, তাদের এসব বক্তব্য, দৃষ্টিভঙ্গি ও কর্মকৌশল চিন্তাশীলদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। তারা বারবার ‘ইসলাম’ ‘ইসলাম’ ও ‘মুসলমান’ ‘মুসলমান’ বলে যে চিৎকার-চেচামেচি করে তা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও চরম সমস্যাপূর্ণ। বিশেষ করে ধর্মের নামে যারা রাজনীতি করে, শিক্ষাব্যবসা করে, সাম্প্রদায়িকতা লালন করে, তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই চিৎকারগুলো বেশি করে। এসব সমস্যাপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি ও কর্মকৌশলে পরিবর্তন আনা অপরিহার্য। ধর্মকে বিশ্বদৃষ্টি ও মানবদৃষ্টি দিয়ে আমাদের অনুভব করতে হবে।
দেশি-বিদেশি যেসব মাওলানা, মুফতি, সরকারি-বেসরকারি চাকুরে মাসে মাসে বেতন ভোগ করে, এসিরুমে বসে, গাড়িতে চড়ে, দামি দামি পোশাক পড়ে আর সব বিলাসিতায় গা ভাসিয়ে ইসলামের কথা বলে, তাদেরকে মুক্তভাবে বিচার করুন। নবী ও সাহাবাগণের সংসার কেমন ছিল, আর এদেরগুলো কেমন তা একটু দেখতে চেষ্টা করুন। বিশেষ দল কর্তৃক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃক, বিশেষ পরিবেশের মাধ্যমে মস্তিষ্ককে যে গণ্ডিবদ্ধ ধারণায় গড়ে তোলা হয়েছে তা ছিন্ন করতে কেউ চেষ্টা করছে না।
যেসব শিক্ষাব্যবসায়ী, কালো টাকার মালিক, ব্যক্তিগত ও সাংসারিক জীবনে থার্ডক্লাশ আচরণে অভ্যস্ত, বিশেষ রাজনৈতিক দল-গোষ্ঠী কর্তৃক মগজ-ধোলাইয়ের শিকার, ইসলামের নামে করা এমনকি শিক্ষা ও মানবতার নামে করা তাদের কর্মকাণ্ডগুলোও সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। ব্যবসা শুধু ধর্মের নামেই চলে না, শিক্ষা ও মানবতার নামে আরো বেশি চলে।
জাকির মাহদিন : সাংবাদিক, কলামিস্ট
zakirmahdin@yahoo.com
Some text
[sharethis-inline-buttons]
valo onek